শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
ফুলকুঁড়ি আসর এর ফাইনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অনুষ্ঠিত আওয়ামী ঘরানার বিতর্কিত লোকদের দিয়ে উজিরপুর উপজেলা শ্রমিক দলের কমিটি গঠন করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সান্টু খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা
সাংবাদিক আরিফুল নির্যাতন: কুড়িগ্রামের সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এখন বরিশালে মোবাইল কোর্ট চালান

সাংবাদিক আরিফুল নির্যাতন: কুড়িগ্রামের সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এখন বরিশালে মোবাইল কোর্ট চালান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে নির্যাতনের ঘটনায় ফৌজদারি মামলার আসামি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলাম এখন বরিশালে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) চালাচ্ছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিভাগীয় মামলা, সাংবাদিক আরিফের করা ফৌজদারি মামলা তদন্তাধীন। রাতের বেলা সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাসায় তাণ্ডব চালিয়ে পরে রাতেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনার পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাতুলসহ চার কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন এখনো ওএসডি হয়ে আছেন। আর সম্প্রতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি করা হয়। পুলিশ জানায়, আরিফর করা মামলায় পুলিশ এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি। আর আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিসির দেওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। জানা গেছে, বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে মধ্যরাতে বাসার দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাহাতুল গত ৫ মে বরিশালে তরমুজের আড়তে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নামে একটি সরকারি পুকুরের নামকরণ ও অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়ি থেকে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগে রয়েছে। ওই ঘটনায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে স্ত্রী ও শিশুসন্তানদের সামনে আরিফুলকে মারধর করতে করতে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের কথিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো হয়। মধ্যরাতেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আরিফের বিচার করা হয় এবং তার কাছে আধা বোতল মদ ও ১৫০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে এমন অভিযোগ এনে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে ওই রাতেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলাম। এ ঘটনায় আরও জড়িত ছিলেন কুড়িগ্রামের তখনকার জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনসহ তাদের নির্দেশ পালন করা অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। গণমাধ্যমে এ ঘটনা প্রচারিত হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে পরদিন ঘটনাস্থলে যান রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। তার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রশাসক পারভীন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাতুলসহ চার কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। আর জামিনে ছাড়া পান সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান। এ ব্যাপারে বরিশালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাতুল ইসলামকে তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এটা আমার অথরিটির কাছ থেকে জেনে নিন।’ সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে নির্যাতন ও তার সাজার বৈধতা নিয়ে গত বছরের ১৫ মার্চ বাংলা ট্রিবিউনের তখনকার নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। রিট আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থী হবে না, তাকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়। এ ছাড়া রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আরিফুল ইসলামকে রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে নির্দেশ দেন। এরপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুলসহ ওই মামলার আদেশ দেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বর্তমানে করোনার কারণে সেই আদেশ এখনো বহাল আছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঘটনায় আমি কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩৫-৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করেছিলাম। মামলায় পুলিশ এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি।’ এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে কুড়িগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন জানিয়ে রিগান বলেন, ‘আদালত আমার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা জজ আদালতে একটি রিভিউশন করেছি। আদালত রিউশন শুনানি তারিখ ধার্য করেছেন এবং বিবাদীদের নোটিশ করেছেন।’ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসন যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমাকে সাজা দিয়েছিলেন, হাইকোর্ট ওই সাজার মেয়াদ ছয় মাস স্থগিত করে সরকারকে রুল দিয়েছিলেন। সরকার ওই রুলের জবাব এখনো দেয়নি। পরে করোনার কারণে হাইকোর্টের আদেশ আগের মতোই স্থগিত রয়েছে।’ জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার তখনকার ডিসি সুলতানা পারভীন এখনো ওএসডি। আর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট করে বদলি করা হয়েছে। রিগান বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো তিনি (রাহাতুল) আমার মামলার একজন ফৌজদারি আসামি। পুলিশের চোখে তিনি পলাতক। তাহলে তাকে কীভাবে বরিশালে বদলি করা হয়?’ এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. গোলাম মর্তুজা জানান, সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের করা মামলাটি এখনো তদন্তাধীন। মামলায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলব।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com